কৈলাশটিলা গ্যাস কূপে প্রতিদিন মিলবে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

কৈলাশটিলা গ্যাস কূপে প্রতিদিন মিলবে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

মাহফুজ আহমদ চৌধুরী ॥ গোলাপগঞ্জে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফল)-এর আওতাধীন কৈলাশটিলার একটি পরিত্যক্ত কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই এই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে। এ কূপ থেকে প্রতিদিন ৭০ লক্ষ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন এসজিএফএল-এর কর্মকর্তারা। 

এসজিএফএল সূত্রে জানা যায়, গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-২ নং কূপ থেকে দীর্ঘদিন গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। গত ২৭ জুলাই এই কূপ পুনঃখনন শুরু হয়। খননের পর চলতি সপ্তাহে এই কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খননকাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএল এর আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ চলছে। সিলেটের ১৪টি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে গত বছর উৎপাদন শুরু হয়। এবার আরেকটি কূপ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। 

গ্যাস পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে এসজিএফএল-এর মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক জানান, এই কূপ উৎপাদনে যেতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আগামী সপ্তাহ থেকে এখানকার গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ হতে পারে বলে তার আশা। প্রতিদিন এখান থেকে ৭০ লক্ষ ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, এই কূপের একটি লেয়ার থেকে আগে গ্যাস উৎপাদন করা হয়েছিল। এরপর এই লেয়ারে পানি এসে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা এই কূপ পুনঃখনন কাজে আরও একাধিক লেয়ারের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে গত ৯ ও ১১ নভেম্বর টেস্টিং করে গ্যাস পাওয়া গেছে।

এ ছাড়াও গ্যাসের সাথে এই কূপ থেকে প্রাপ্ত উপজাত থেকে দৈনিক ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন করা যাবে বলে জানা গেছে। এ কূপের ওয়ার্কওভারে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা, যা এসজিএফলের নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে।

এর আগে গত বছর এসজিএফএল-র আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এসজিএফএলের ১৩টি কূপ গ্যাস উৎপাদনে রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এসজিএফএল সূত্র। 

১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কৃত হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। সেগুলো হলো হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।